র্যাব-পুলিশের দফায় দফায় অভিযানে চকরিয়া উপজেলার হারবাং ও পাশের ইউনিয়ন লামার আজিজনগর থেকে ইতোমধ্যে লাখ লাখ লিটার বাংলা মদ ও মদ তৈরীর উপকরণ জব্দ করা হয়েছে। প্রতিবারই অভিযানের পর প্রশাসন উদ্ধারকৃত চোলাই মদ ও উপকরণ ধংস করেছে। কিন্তু প্রশাসনের এসব অভিযানেও পরও ওই এলাকায় থেমে নেই মাদকের জমজমাট বাণিজ্য।
অভিযোগ উঠেছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ধারাবাহিক অভিযানে কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ চোলাই মদ ও মদ তৈরীর উপকরণ জব্দ করা হলেও প্রতিবারই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান জড়িত প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা।
স্থানীয় সুত্রে অভিযোগ রয়েছে, হারবাং-আজিজনগর এলাকার অঘোষিত মাদক সম্রাট তোফায়েল আহমদ বারবার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হলেও পরে আইনের ফাঁকফোকরে নানা কায়দায় তিনি আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসছে। এরপর তিনি আগের মতো অব্যাহত রাখছেন মাদক ব্যবসা। কয়েকমাস আগে হারবাং পুলিশ ফাড়িঁর আইসি আলমগীর আলম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মাদক সমাট তোফায়েল আহমদকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে তিনি আদালত থেকে জামিনে এলাকায় ফিরে ফের আগের মতো ব্যবসার হাল ধরেছেন।
জানা গেছে, সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল আজিজনগর পুলিশ ফাড়িঁর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে পিকআপ ভর্তি ৪৬০ লিটার চোলাই মদ জব্দ করেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে লামা থানায় মাদক আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি মামলা রুজু করেছেন। মামলাটিতে ১নং আসামি করা হয়েছে সদ্য জেল ফেরত তোফায়েল আহমদকে। বর্তমানে ওই মামলা থেকে বাদ যেতে তোফায়েল নানাভাবে চেষ্ঠা চালাচ্ছেন বলে জোর গুঞ্জন চলছে।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের উত্তর হারবাং কলাতলী গ্রামের বাসিন্দা মৃত আহমদ কবিরের ছেলে তোফায়েল আহমদ দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। পাশাপাশি তিনি বনবিভাগের বিপুল পরিমাণ জায়গা দখলে নিয়ে সেখানে প্লট তৈরী করে তা বিক্রি করছেন। এসব কারনে বনবিভাগ ও পুলিশের পক্ষ থেকে থানা ও আদালতে তার বিরুদ্ধে বর্তমানে প্রায় ২৪টি বন মামলা, ৯টি মাদক মামলা, তিনটি সাধারণ ডায়েরী, নানা কারনে থানায় ১৩টির বেশির লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী লোকজন।
মামলার মধ্যে রয়েছে আজিজনগর বনবিটের ১২টি বন মামলা, চুনতী রেঞ্জের ২৪টি বন মামলা, চকরিয়া, লামা, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ থানায় ৯টি মাদক আইনে মামলা, তিনটি জিডি ও এসব থানায় বিভিন্ন অভিযোগে ভুক্তভোগী লোকজনের ১৩টি লিখিত অভিযোগ। বেশির ভাগ মামলায় তোফায়েল বর্তমানে আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। এছাড়াও তাঁর ভাই জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে রয়েছে অন্তত সাতটি বন মামলা। তাঁর দাপটের কারনে বনকর্মীরাও এলাকায় অনেকটা অসহায় বলে দাবি করেন বনবিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, র্যাব-পুলিশের একাধিক টিম তোফায়েলকে গ্রেফতারে ইতোপুর্বে তার কলাতলীস্থ বাড়িতে অনেকবার অভিযান করেছে। কিন্তু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন তাকে সেখান থেকে কোনদিন গ্রেফতার করতে পারেনি। মুলত তাঁর আস্তানা অতিক্রমকালে নিজস্ব সোর্স উৎপেতে থাকার কারনে প্রশাসন অভিযান চালালেও পরে ব্যর্থ হন। গতবছর চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন তাঁর বাড়িতে অভিযান গিয়ে অনুরূপভাবে নিস্ফল হন।
পাঠকের মতামত: